বিশ্ব ওজোন দিবস
Posted on
আপনার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে অক্সিজেন গ্যাসের অবদান অস্বীকার করতে পারবেন? বুঝে হোক বা না বুঝে আমরা সবাই বাতাসে থাকা অক্সিজেনের কদর করি। কিন্তু এই একই অক্সিজেন পরমাণুতে তৈরি অন্য একটি গ্যাস যা না থাকলে পৃথিবীটা বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠতো তার কথা আমরা কতজন জানি বা তার কদরটা কতজন বুঝি? ওজোন গ্যাস (O3), তিনটি অক্সিজেন পরমাণু যুক্ত হয়ে যে বিশেষ যৌগ তৈরি করলো তার গুরুত্ব ও অবদান কোন অংশেই অক্সিজেন গ্যাস থেকে কম নয়। হয়তো আমাদের অজ্ঞতার জন্যই এই গ্যাসের মূল্য উপলব্ধি করতে পারি না। আজ ১৬ই সেপ্টেম্বর “আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সুরক্ষা দিবস” বা “বিশ্ব ওজোন দিবস”-এ চলুন জেনে নেই ওজোন গ্যাসে লুকিয়ে আছে কোন রহস্য।
তিনটি অক্সিজেনে ঘটিত এই যৌগটিকে বায়ুতে থাকা আর আট দশটি যৌগ থেকে আলাদা করেছে তার একটি বিশেষ গুণ। তা হলো এটি সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মিকে শোষণ করতে পারে। বায়ুর স্ট্রাটোমন্ডল (ভূমির ১৫ কি.মি. উপর থেকে ৫০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুমন্ডলীয় এলাকা)-এ ওজন গ্যাসগুলো থাকে। তাই এই স্তরকে অনেক সময় “ওজন স্তর” ও বলা হয়ে থাকে। ওজন স্তরের প্রধান কাজই হলো সূর্যের আলোকে ফিল্টার করে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষা করা। ওজন গ্যাস সূর্যের আলোর একটা নির্দিষ্ট পরিসরের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো থেকে শক্তি শোষণ করে অক্সিজেনে বিভক্ত হয় ও তাপ উৎপন্ন করে:
O₃ → O + O₂ + kinetic energy
এভাবে ওজোন গ্যাস পৃথিবীকে অতিবেগুনী রশ্মি থেকে সুরক্ষিত রাখে। কিন্তু বর্তমান যুগের আধুনিকায়নের নামে আমরা এমন কিছু উপাদান পরিবেশে ছেড়ে দিচ্ছি যা এই ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে দেয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি উপাদান হলো CFC বা ক্লোরোফ্লোরো কার্বন, যা আমাদের ব্যবহৃত ফ্রীজ, এয়ার কন্ডিশনার ইত্যাদি থেকে নির্গত হচ্ছে।
ওজোন স্তরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও এ স্তর সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ওজোন স্তর সংরক্ষণের জন্য “আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সুরক্ষা দিবস” হিসেবে সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখটি মনোনীত করেছে। যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী নানান কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হচ্ছে।