পোস্টার প্রেজেন্টেশন , স্কিল, গবেষণা ও অভিজ্ঞতা

Posted on

Written by

ChemFusion Research

পোস্টার প্রেজেন্টেশন , স্কিল,  গবেষণা ও  অভিজ্ঞতা

চলছে All About Poster Presentation শীর্ষক অন্যরকম একটি ইভেন্ট। অন্যরকম ইভেন্ট বলার কারণ এটা কোনো কম্পিটিশন না, সবাই এখানে প্রথমে শিখবে কিভাবে পোস্টার এর আইডিয়া জেনারেট করতে হয়, কিভাবে বানাতে হয়, এরপর নিজের বানানো পোস্টার কিভাবে উপস্থাপন করতে হয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো যারাই পোস্টার প্রেজেন্টেশন করবে সবাই পাবে কেমফিউশন এর পক্ষ থেকে গিফট এবং সার্টিফিকেট। এর পিছনে কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে, সবাইকে শুরু থেকেই গবেষণার প্রতি উৎসাহিত করা, ক্লাসরুমে বইয়ের পাতায় যা শিখছে সেখান থেকে আইডিয়া জেনারেট করতে শেখানো আর সবশেষে প্রেজেন্টেশন স্কিল তৈরি করতে সহযোগিতা করা।

এই ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছে সারা দেশের ১৩ টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮৪ টি টিম। যাদের মধ্যে অনেকেই প্রথমবারের মতো পোস্টার প্রেজেন্টেশন টার্মটার সাথে পরিচিত হয়েছে, বেশিরভাগই প্রথমবারের মতো পোস্টার প্রেজেন্টেশন করবে।

এ বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত কেমফিউশন আন্তর্জাতিক রসায়ন উৎসবে পোস্টার প্রেজেন্টেশন প্রতিযোগিতায় রানার-আপ ছিলেন তাবাসসুম তাসফিয়া এবং সানিমা চৌধুরী। সেবারই প্রথম পোস্টার প্রেজেন্টেশন কম্পিটিশন এ অংশগ্রহন করেন তারা। এরপর আরো কয়েকটি কনফারেন্স এ অংশগ্রহন করে জিতে নিয়েছিল সেরার পুরস্কার। তারা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন কেমফিউশন রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন টিমের সাথে।

পোস্টার প্রেজেন্টেশন সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন কবে?

তাবাসসুম তাসফিয়া: অনার্স ২য় বর্ষে থাকতে

সানিমা চৌধুরী: আমিও অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে থাকতেই প্রথম জানতে পারি পোস্টার প্রেজেন্টেশন সম্পর্কে।

কেমফিউশন আন্তর্জাতিক রসায়ন উৎসবের পোস্টার প্রেজেন্টেশন এ রানার আপ হওয়ার পর আপনার অনুভূতি কি ছিল?

তাবাসসুম তাসফিয়া: আরও অনেক বেশি জানতে হবে যদি পরবর্তীতে কখনো পোস্টার তৈরি করতে হয়।

সানিমা চৌধুরী: পরিশ্রম আর চেষ্টা দিয়ে অনেক ভালো কিছু সম্ভব। যেকোনো ভালো কিছুর জন্য সময় দিতে হবে ।

পোস্টার প্রেজেন্টেশন এ কি কি জিনিস গুরুত্বপূর্ণ?

তাবাসসুম তাসফিয়া: প্রথমত ধৈর্য। এরপর বাকি জিনিস। যেহেতু নিজের কাজের উপর পোস্টার ছিলোনা আমাদের, তাই প্রচুর পড়তে হইসে। সমস্ত জিনিসগুলো পড়ে বুঝে একজায়গায় করলে পরে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। পাওয়ার পয়েন্ট, এক্সেল এগুলো সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকতে হবে যেহেতু ভিজুয়ালাইশনের ব্যাপারটা থাকে। আর আমার ক্ষেত্রে কাজ করতে করতে কোন জিনিস প্রয়োজন সেটা আরো ভালো জানা হইসে। তাই আপাতত সব মনে করতে পারতেসিনা।

সানিমা চৌধুরী: বিস্তৃত জিনিস কে সংক্ষেপে সহজলব্ধভাবে দর্শকের বুঝার উপযোগী করে তোলার মতো চিন্তা করতে পারার দক্ষতা থাকা উচিত । কোন বিষয়গুলো যুক্ত করতে গিয়ে অতিরঞ্জিত হয়ে যাচ্ছে বা কোন গুরুত্বপূর্ণ টপিক বাদ পরছে কিনা এসব খেয়াল রাখতে হবে। পাওয়ার পয়েন্ট, এক্সেল এগুলো তে দক্ষ হলে ডিজাইনিং এ খুব ভালো কাজ দেয় । রিসার্চ / রিভিউ পেপার পড়ে সারমর্ম বুঝতে পারার অভ্যাস থাকলে খুব ভালো।

আইডিয়া জেনারেট করাটা কি কঠিন ?

তাবাসসুম তাসফিয়াঃ আমার জন্য কঠিন ছিলো যখন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করসিলাম। যেহেতু গবেষণা কিংবা খুব বেশি রিসার্চ পেপার পড়ার অভিজ্ঞতা ছিলোনা তখন। কিন্তু নিত্যনতুন বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ এবং গবেষণামূলক কাজের সাথে জড়িত থাকলে আইডিয়া জেনারেট করাটা কঠিন হওয়ার কথা না।

সানিমা চৌধুরী: কঠিন এই অর্থে যে চিন্তা করতে গেলে অনেক কিছু ভাবা যায় কিন্তু নিজের জ্ঞানের সাথে মিলিয়ে একটা পরিবেশে দর্শকের বুঝার উপযোগী টপিক সিলেক্ট করতে হবে।

পোস্টার প্রেজেন্টেশন কেন করা উচিত বলে মনে করেন?

তাবাসসুম তাসফিয়া: প্রথমত নিজেকে এবং নিজের কাজকে উপস্থাপন করার একটা সুযোগ থাকে। একটা রিসার্চ করতে একজন মানুষের কাজভেদে দীর্ঘ একটা সময় কাটাতে হয়। সেই কাজটাকে সবার সামনে স্বল্প সময়ে এবং স্বল্প জায়গায় উপস্থাপনের জন্য একটা দক্ষতা অর্জন হয়। আমার কাজটা কতটুকু আমার চারপাশকে কীভাবে প্রভাব ফেলতেসে সেটা নিয়ে অনেক কিছু জানা হয়। যখন পোস্টার প্রেজেন্টেশন নিয়ে কাজ করতে হয়, তখন শুধু কাজনা , আমার কাজকে একজন মানুষ কীভাবে মূল্যায়ন করবে সেটা নিয়েও ভাবতে হয় অনেক। আর পুরস্কার কিংবা সম্মাননাও কম কিছু নয়। দীর্ঘ সময় একটা জিনিস নিয়ে কাজ করা এবং সেই কাজের জন্য এপ্রিসিয়েশন পাওয়াটা পরবর্তী কাজের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। একই সাথে কম্পিটিশনে অংশগ্রহণের ফলে অন্য সবার কাজ সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায় এবং ভবিষ্যতে কী ধরনের জিনিস কাজ করা যেতে পারে সেটা নিয়ে ধারনা পাওয়া যায় কিছুটা।

সানিমা চৌধুরী: সত্যি বলতে পার্টিসিপেইট করতে গেলে বুঝতে পারা যায় এর গুরুত্বটা ঠিক কতখানি। আইডিয়া জেনারেট করা, তারপর জিনিসগুলো উপস্থাপন করা, উপস্থাপিত জিনিস সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখা , সংক্ষেপে নিজের চিন্তাধারা বা ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরা- কোন একটা রিসার্চ বা কাজকে উপস্থাপন করতে গিয়ে এমন হাজারো বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ থাকে ।

পোস্টার প্রেজেন্টেশন কি একটা স্কিল?

তাবাসসুম তাসফিয়া: আমার কাছেতো অবশ্যই। একটা পোস্টারের জন্য অনেক জিনিস সম্পর্কে পড়াশুনা প্লাস জিনিসটার ভিজুয়াল রিপ্রেজেনটেশনের জন্য অনেক মাথা খাটাতে হয়। আমার কাছে একেকটা পোস্টার একটা স্টোরির মতো। যেটায় ধৈর্য দিয়ে কাজ করতে হয় স্টোরিটা রিপ্রেজেনটেবল করে তুলতে হয়।

সানিমা চৌধুরী: পোস্টার প্রেজেন্টেশন অবশ্যই একটা স্কীল । সাথে উপস্থাপনা, উপস্থিত বুদ্ধমত্তার পরিচয় দেওয়া সহ আরো বিভিন্ন ধরণের স্কীল অর্জন করা যায় যার জন্য অবশ্যই পোস্টার প্রেজেন্টেশন এ পার্টিসিপেইট করা উচিত ।

আপনি কি মনে করেন পোস্টার প্রেজেন্টেশন গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে?

তাবাসসুম তাসফিয়া: যেহেতু কোনো গবেষনা থেকে এখন অবধি কোনো পোস্টার দেওয়া হয়নাই তাই এটা নিয়ে খুব বেশি ডিটেইল বলতে পারবোনা। কিন্তু যেসকল বিষয় নিয়ে পোস্টার দেওয়া হইসে ওইগুলা নিয়া কাজ করার ইচ্ছে হইসে। আরেকটা জিনিস। ভালো কাজকে এপ্রিসিয়েট করলে অবশ্যই সেই কাজ করার জন্য উৎসাহ জাগে। রিসার্চ যারা করেন সেইক্ষেত্রে তাদের জন্য উৎসাহ টা অনেক বড় পাওনা। কাজের ভালো খারাপ দিক সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়।

সানিমা চৌধুরী: কেউ পোস্টার প্রজেন্টেশন করতে গিয়ে কোন একটা টপিক সিলেক্ট করে সেটা নিয়ে সঠিকভাবে আগানোর পর যদি আগ্রহ জন্মায় তাহলে সেটা অবশ্যই গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে বলে মনে করি ।

Please note that the information above is totally the personal opinion of the runner up of Poster Presentation segment in Chemfest-2022. It’s not an expert opinion.

Share:

You might also like